শহীদ মিনার, কলকাতা

শহীদ মিনার - ভারতের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এক রাজস্ব

কলকাতা (পূর্বে ক্যালকাটা নামে পরিচিত) মহীয়ান অট্টালিকায় - ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্মারক-এ পরিপূর্ণ। জাতীয়তাবাদে গর্বিত, ভারতীয়দের নাম এই প্রাক-ভিক্টোরিয়ান স্মৃতিস্তম্ভটির উপর অর্পিত। তবে, 1828 খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত অক্টারলোনি স্মৃতিস্তম্ভটির, ভারতের স্বাধীনতার দু’দশক পরে 1969 খ্রীষ্টাব্দে শহীদ মিনার নামে পুর্ননামকরণ করা হয়। “শহীদ” হল “স্বদেশপ্রেমী”-র হিন্দি শব্দ। অর্থাৎ, স্মারকটি সকল স্বদেশপ্রেমী বা সংগ্রামীদের সম্মানে নামকরণ করা হয়, যারা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের জীবন বলিদান করেন। বিস্ময়কর, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি জড় পদার্থের স্মৃতিস্তম্ভ কিভাবে ভাগ্যকে প্রভাবিত করে। তবুও, স্থানীয়রা, এটিকে প্রসঙ্গক্রমে 'স্মৃতিস্তম্ভ' হিসাবে উল্লেখ করে।

অক্টারলোনি স্মৃতিস্তম্ভটি, 1814-1816 খ্রীষ্টাব্দে, আ্যংলো নেপালি যু্দ্ধে, স্যার ডেভিড অক্টারলোনির বিজয়কে স্মরণ রেখে তৈরী করা হয়েছিল।

স্থাপত্য

শহীদ মিনার একজন দর্শককে তার জ্ঞাতিভাই ভারতের রাজধানী শহরে অবস্থিত আরেক জনপ্রিয় – কুতুব মিনারের কথা মনে করিয়ে দেয়। আংশিকভাবে উভয়ই লম্বা স্তম্ভ। তবে শহীদ মিনারের স্থাপত্য তুলনামূলকভাবে ফ্যাকাশে। কুতুব মিনারের স্তম্ভ শীর্ষের উপর খোদিত মহীয়ান ভাস্কর্যের আমরা মূল্যবিচার করতে পারি। শহীদ মিনারের চূড়ায় পৌঁছাতে দর্শনার্থীদেরকে 223-টি সিঁড়ি নিয়ে গঠিত একটি সর্পিলাকার সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়। সন্ধ্যাবেলায়, শহীদ মিনার সুসজ্জিত হয়ে ওঠে এবং পায়ে হেঁটে সিঁড়ি বেয়ে শীর্ষে ওঠা শুধুমাত্র আপনার পেশীর ব্যায়ামের একটি নিখুঁত উপায়ই নয় বরঞ্চ পার্শ্ববর্তী দৃশ্য পরিদর্শনেও চোখকে প্রাণবন্ত করে তোলে। মিনারটিতে দু’টি তল রয়েছে। আপনি চাইলে অলিন্দতেও আপনার জায়গা নিতে পারেন। মূখ্য স্থানান্তরণ হল দ্বিতীয় তলে। সেখান থেকে পরবর্তী অলিন্দ পর্যন্ত, কয়েকটি ছোট সিঁড়ি রয়েছে।

বর্তমান তাৎপর্য

রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ও র্যা্লী বা ফেরি বর্তমানে শহীদ মিনারে সঞ্চালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য রাজনীতির আগ্রহের বিবেচনায়, শহীদ মিনার সারা বছর ধরে একটি খুবই ব্যস্ত জায়গা হয়ে রয়েছে।

শহীদ মিনার মানচিত্র

শহীদ মিনার সম্পর্কে তথ্যাবলী

• শহীদ মিনারের নির্মাতারা তুর্কি এবং মিশরীয় উভয় স্থাপত্যের কাছে ঋণী।
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে 1931 খ্রীষ্টাব্দে প্রথম শহীদ মিনারে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

শহীদ মিনার কোথায় অবস্থিত?

ঠিকানা: ডাফেরিন রোড, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।

পৌঁছানোর উপায়

বিমান মাধ্যমে: নিকটবর্তী বিমানবনদর হল নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবনদর। ভায়া ভি.আই.পি. রোড হয়ে গাড়ির মাধ্যমে বিমানবনদর থেকে শহীদ মিনারে পৌঁছাতে 30 মিনিট সময় লাগে।

রেল মাধ্যমে: শহীদ মিনার, হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন ও শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশন, উভয়ের থেকে সান্নিধ্যেই অবস্থিত। রেলওয়ে স্টেশন থেকে স্মৃতিস্তম্ভটির দূরত্ব 2 মাইলের চেয়েও কম। কলকাতার ট্র্যাফিক পরিস্থিতির কথা মাথায় আনলে, এমনকি এই ছোট দূরত্ব ভ্রমণ করতেও বেশ কিছুটা সময় লাগতে পারে।

শহীদ মিনার পরিদর্শনের সেরা সময়

শীতের সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর হল কলকাতা পরিভ্রমণের সেরা সময়। এর পরে, বিশেষত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর গ্রীষ্মের সময় বহিরাঙ্গন আনন্দ উপভোগ করার ক্ষেত্রে খুবই গরম এবং আর্দ্র হয়ে ওঠে।

শহীদ মিনার দর্শনের সময়

শহীদ মিনার, প্রতিদিন সকাল 10:00-টা. থেকে সন্ধ্যা 6:00-টা. পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।

শহীদ মিনারের টিকিট

শহীদ মিনারে প্রবেশের জন্য কোনও প্রবেশমূল্য লাগে না।

শহীদ মিনারের উপর আরোও তথ্য

শহীদ মিনারের স্থানাঙ্ক কি কি?

22.56 ডিগ্রী N, 88.34 ডিগ্রী E।

শহীদ মিনারের নিকটবর্তী আকর্ষণগুলি কি কি?

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, হাওড়া ব্রিজ, ইডেন গার্ডেন, কালীঘাট ইত্যাদি।

* সর্বশেষ সংযোজন : December 17, 2015

Published On: Thursday, December 17th, 2015