লাদাখ উত্তর ও পূর্ব কাশ্মীর অঞ্চলের একটি বড় এলাকা। এটি বিশ্বের এক সর্বোচ্চতম অঞ্চল এবং এটি উচ্চ সমভূমি এবং গভীর উপত্যকার সমন্বয়ে গঠিত। এই স্থানটি 1970 সালে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয় এবং তারপর থেকে এটি পর্বতারোহীদের এবং যারা ট্রেক বা পদভ্রমণ করতে পছন্দ করেন, তাদের কাছে সবচেয়ে এক অন্যতম প্রিয় জায়গা হয়ে আসছে। লাদাখের এখনও প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হল নয় তলা কাঠামো, যেটি ষোড়শ শতকে নির্মিত হয়। একসময় এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ভবন ছিল। এই প্রাসাদটি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ দ্বারা পুনঃস্থাপন করা হচ্ছে, তবে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। আপনি যদি লাদাখে ছুটি কাটানোর জন্য যান, তাহলে অন্য আর একটি স্থান হল নূ্ব্রা উপত্যকা যেটির পরিদর্শন অপরিহার্য। এটি ভারতের একমাত্র স্থান যেখানে পর্যটকরা 10,000 ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মরুভূমিতে জোড়া কুঁজওয়ালা ব্যাকট্রিয়ান উট দেখতে পেতে পারেন। উপত্যকাটি লাদাখ (লেহ)-এর রাজধানী শহর থেকে প্রায় 150 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, তবে এই ভ্রমণযাত্রায় কতক্ষণ সময় লাগতে পারে তা বরফ এবং অন্যান্য বিষয় যেমন সামরিক সৈন্যবাহনীর গতিবিধির উপর নির্ভর করে। নূ্ব্রা ভ্যালি হল বন্ধুবৎসল ও সহানুভূতিশীল জনসাধরণের দ্বারা পরিপূর্ণ একটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ স্থান। নূ্ব্রা নদীও পিকনিকের জন্য চমৎকার স্থান।
পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর সময় লাদাখের মঠগুলির পরিদর্শন করার কথা মনে রাখা উচিত। এই অঞ্চলের মঠগুলির মধ্যে হেমিস গুম্ফা হল অন্যতম বৃহৎ এবং এটি প্রায় 150 জন সন্ন্যাসীর আবাসস্থল।
লাদাখ সম্পর্কে সবচেয়ে আশ্চর্য্যজনক তথ্যটি হল এই অঞ্চল অনুর্বর হলেও খুবই সুন্দর। সরলতা এই অঞ্চলের জীবন-যাত্রার একটি প্রণালী কারণ ভারতের অন্যান্য শহরগুলিতে যতটা আধুনিতার ছোঁয়া রয়েছে, সেইপ্রকার আধুনিকতা এখনও লাদাখকে স্পর্শ করেনি। এই অঞ্চলের জলবায়ুর অবস্থার কথা বিবেচনা করে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে লাদাখের মানুষজন অত্যন্ত কর্মক্ষম।
লাদাখ হল ভারতের সর্বোচ্চ অধ্যুষিত অঞ্চল এবং পর্বতমালার মধ্য দিয়ে সিন্ধু নদী প্রবাহিত হয়েছে।পর্যটকদের লাদাখ পরিভ্রমণের পূর্বে তারা শারীরিকভাবে সতেজ কিনা তা নিশ্চিতকরণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। অতি উঁচু উচ্চতায় পর্বতারোহণের অসুস্থতার জন্য মানুষদের সেখানে পৌঁছানোর পর প্রথম 24 ঘন্টার জন্য সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ।
লাদাখ জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত এবং নিকটতম বিমানবন্দর হল লেহ্, যা দিল্লী, চন্ডীগড় ও শ্রীনগরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। লাদাখের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন হল জম্মু যার সম্ভাব্য প্রান্তিক হল শ্রীনগর ও তারপর লাদাখ। শ্রীনগর থেকে কার্গিল-এ পৌঁছাতে 1 রাত সহ প্রায় 2 দিন সময় লাগে। এছাড়াও লেহ্ থেকে দিল্লী, শ্রীনগর ও জম্মু পর্যন্ত সরাসরি বিমান সংযোগ রয়েছে। লাদাখ পৌঁছানোর জন্য বিমান মাধ্যমের চেয়ে সড়ক মাধ্যমে ভ্রমণ করাটাই শ্রেয়, তাহলে মানুষ সহজেই অভিযোজিত করতে সক্ষম হবে।
সেরা সময় হল জুনের গোড়া থেকে অক্টোবর পর্যন্ত, কারণ এইসময় এই অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। এই সময় এটি স্বর্গোদ্যান হয়ে ওঠে।
নিকটবর্তী আকর্ষণ : সোনমার্গ, পহেলগাঁও, মানালি।
* সর্বশেষ সংযোজন : July 20, 2015