বেনারস নামেও অভিহিত, বারাণসী আজকের দিনে বিশ্বের সবচেয়ে এক অন্যতম পবিত্রময় শহর। মার্ক টোয়েন সুখ্যাতিভাবে এটিকে “ইতিহাসের চেয়েও প্রাচীন” বলে বর্ণিত করেছেন। এই শহরটির ইতিহাস 8,000 বছরের চেয়েও প্রাচীন। গঙ্গ নদীর তীরে অবস্থিত ও প্রভু শিবের দ্বারা প্রবর্তিত, প্রাচীন বৈদিক কাল থেকে এই শহরটির শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিত্রাণের নদী এবং এক আশার প্রতীক হিসাবে গঙ্গা নদী শহরটিকে ঐন্দ্রজালিক ও অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। সর্বসাধারণের মধ্যে অনেক ধর্মীয় রীতিনীতি এই শহরের ঘাটে সংঘঠিত হয় এবং এগুলির অভিগম্যতা হয়তো প্রাচীন কিন্তু এর জীবন্ত ঐতিহ্য অনেক ভ্রমণার্থীদের বারাণসীতে টেনে আনে। ভারতীয় উপমহাদেশে গঙ্গা হল সবচেয়ে মহত্বপূর্ণ নদী এবং মানুষেরা এই পবিত্র নদীতে আসতে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করে। যদিও, গঙ্গার জল এখন দূষিত হয়ে পড়েছে, তবে নদীটির পবিত্রতা ও মানুষের বিশ্বাস এখনও সেই একই জায়গাতে রয়েছে।
গঙ্গা ছাড়া বারাণসীকে কল্পনা করাই অসম্ভব এবং নদীর তীর থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য সম্ভবত এই পবিত্র শহরটিতে ভ্রমণ করতে আসা মানুষদের দর্শনের জন্য সবচেয়ে এক অন্যতম সুন্দর দৃশ্য।
এছাড়াও বারাণসী তার প্রাচীন ও সুন্দর মন্দিরগুলির জন্যও সুপরিচিত; যেমন কাশী বিশ্বনাথ, কাল ভৈরব, দূর্গা কুন্ড এবং অন্নপূর্ণা। এই মন্দিরগুলি বিশেষত ধর্মীয় ক্রিয়ালাপের জন্য ঘনসন্নিবিষ্ট। আকর্ষণ, সঙ্গীত এবং নৃত্য ছাড়াও এই শহরটির ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট রয়েছে। বারণসীতে বেশ কিছু নৃত্য উৎসব রয়েছে এবং অনেক বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং নর্তকী এই শহরে তাদের শিল্পকলার উদ্ভবের ছাপ রেখেছেন।
বারাণসী, উত্তর প্রদেশে গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি রাজ্যের রাজধানী, লখনউ থেকে প্রায় 200 মাইল দূরে অবস্থিত।
অক্টোবর থেকে মার্চ মাসে যেহেতু এখানকার তাপমাত্রা বেশ মনোরম থাকে, সেহেতু এই সময়ই হল বারাণসী পরিদর্শনের সেরা সময়। যেহেতু শীতের মাসগুলিতে এখানে চরম জাঁকজমকতার সাথে উৎসব-অনুষ্ঠানগুলি পালিত হয়, তাই এইসময় এই স্থান বহু পর্যটকদের এখানে টেনে আনে। গ্রীষ্মকালে এই শহর খুবই উষ্ণ ও আর্দ্র হয়, সুতরাং এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যবর্তী সময়ে এই শহরে ভ্রমণ না করাটাই এক ভালো ধারণা।
নিকটবর্তী আকর্ষণ: মুঘলসরাই, লখনউ, মীর্জাপুর, চূনার।
* সর্বশেষ সংযোজন : December 17, 2015