কাঠমান্ডু দরবার চত্বর হল নেপালের একটি খুবই বিখ্যাত স্থান। এটি এখানকার তিনটি দরবার চত্বরের মধ্যে এক অন্যতম। এই জনপ্রিয় চত্বরে, এই অঞ্চলের শাসনকারী শাহ এবং মল্ল রাজাদের প্রাসাদগুলি রয়েছে। কাঠমান্ডু দরবার চত্বরটি হনুমান ধোকা প্রাসাদ ভবনেরও একটি স্থল। এটি ঊনবিংশ শতক পর্যন্ত নেপালের রাজাদের রাজকীয় বাসভবন ছিল। গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলি এই জায়গাতে অনুষ্ঠিত হত এবং সেই ঐতিহ্য আজও চলে আসছে।
প্রাসাদটির সমগ্র পরিকাঠামোটি বিস্তীর্ণভাবে কাঠের খোদাইকার্যের সঙ্গে খুবই সুন্দরভাবে সুসজ্জিত। সেইসঙ্গে এখানে সুশোভিত প্যানেল ও জানালা রয়েছে। প্রাসাদটি মহেন্দ্র মিউজিয়াম ও রাজা ত্রিভুবন মেমোরিয়াল মিউজিয়াম-এর সমন্বয়ে গঠিত। ভ্রমণার্থীরা এই প্রাসাদের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাষ্ট্র কক্ষগুলিও পরিদর্শন করে দেখতে পারেন।
কাঠমান্ডু দরবার চত্বরের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত কূমারী চৌক হল একটি জনপ্রিয় স্থান। এটি নেপালের এক অন্যতম রহস্যময় আকর্ষণ বলে মনে করা হয়। এখানে একটি পিছল পিঁঞ্জর রয়েছে যেটিতে প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন ঐতিহ্যগত চর্চার মনোনয়নের মাধ্যমে একজন যুবতী মেয়েকে রাখা হত। মেয়েটিকে, জনপ্রিয় হিন্দু মাতৃ দেবী, দেবী দূর্গার মনুষ্য অবতার বলে মনে করা হত এবং ধর্মীয় উৎসবের সময় পূজা করা হত।
এখানে অবস্থিত বিভিন্ন প্রাসাদ ও মন্দিরগুলি বেশ কয়েকবার পুর্নসংস্কার করা হয়েছে, যেহেতু তাদের মধ্যে অনেকগুলি অবহেলার দরুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
সংযোজন : 2015 সালের 25-শে এপ্রিল, এক গুরুতর ভূমিকম্প নেপাল দেশটিকে বিস্মিতভাবে ধাক্কা দিয়ে গেছে। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল কাঠমান্ডু থেকে প্রায় 80 কিলোমিটার দূরে এবং কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে 7.9। এই ভূমিকম্পে 4000-এরও বেশি মানুষ তাঁদের জীবন হারিয়েছেন ও বেশ কিছু গঠনকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসীভূত হয়ে পড়েছে। হনুমান ধোকার বেশ কয়েকটি বিভাগ ধসে পড়েছে। সেইসঙ্গে এই ভবনের অন্যান্য বেশ কয়েকটি মন্দিরের প্যাগোডা বা বুদ্ধমন্দিরের চূড়াগুলিও ধসে পড়েছে।
কাঠমান্ডু দরবার চত্বর, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত।
শুষ্ক মরশুমের প্রারম্ভে অক্টোবর-নভেম্বর মাস হল এই অঞ্চল পরিদর্শনের সেরা সময় কারণ এই সময় অঞ্চলটি সদ্য-সমাপ্ত বর্ষার সঙ্গে ঘন সবুজে ছেয়ে থাকে।
নিকটবর্তী আকর্ষণ : লুম্বিনী, পশুপতিনাথ মন্দির, পাতন দরবার চত্বর, সাগরমাথা জাতীয় উদ্যান।
* সর্বশেষ সংযোজন : September 08, 2015