গ্র্যান্ড প্যালেস বা মহীয়ান প্রাসাদটি হল ব্যাংকক সফরের পরিকল্পনাকারী পর্যটকদের জন্য এক অবশ্য-দর্শনমূলক গন্তব্যস্থল। প্রাসাদটি চারটি প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত আছে। এটি অনেক মঠ, দূর্গ এবং মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণকারী রাজা রামা 1-এর দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। তিনি থাইল্যান্ডের শাসক হয়ে ওঠার সময়ে তাঁর প্রশাসনিক কেন্দ্র থোনবুড়ি থেকে ব্যাংককে স্থানান্তরিত করে নেন। তাঁর আবাসন ভবন ছাড়াও রামা 1 তার কার্যালয় ভবন গড়ে তোলার জন্যও এই প্রাসাদটির নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে এই গৌরবমন্ডিত স্থাপত্যবিষয়ক স্মৃতিস্তম্ভটি গ্র্যান্ড প্যালেস বা মহীয়ান প্রাসাদ নামে অভিহিত করা হয়েছিল।
এই গ্র্যান্ড প্যালেসটির মধ্যে প্রায় 35-টি আকর্ষণ রয়েছে। সেগুলির মধ্যে বিশিষ্ট কয়েকটি হল :
গ্র্যান্ড প্যালেসের প্রাঙ্গনের মধ্যে অবস্থিত ওয়াত ফ্রা শি রাট্টানা সাতসাদারাম বা ওয়াত কায়েও বা চ্যাপেল রয়্যাল বা এমারেল্ড বুদ্ধ। মন্দিরের প্রধান ভবনটি একটি পান্না সবুজ বর্ণের বুদ্ধের মূর্তির কেন্দ্রীয় গৃহস্থল।
এমারেল্ড বুদ্ধ মন্দিরের মিউজিয়ামটি ফ্রা থিনাঙ্গ মহা প্রসাত গ্রুপের বিপরীতে অবস্থিত। মিউজিয়ামের একতলায় বিভিন্ন শিল্পকর্মের চিত্র প্রদর্শনী রয়েছে, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সভাগৃহটি সাদা হাতির অস্থির প্রদর্শন করা হয়। এই হাতিগুলির গোলাপী রং-এর কোমল চোখ ছিল। এগুলি রাজপদের এক অপরিহার্য প্রতীক ছিল ও তাদের সম্পদশালীনতা রাজার খ্যাতিকে প্রভাবিত করেছিল; যার যত সাদা হাতি তাঁর তত প্রতিপত্তি।
রাজ্যাভিষেকের পটমন্ডপ, রাজকীয় অলংকরণ ও মূদ্রা যাদুঘরে- মূদ্রা, রাজপোশাক, অলঙ্কারাদি, রাজ দরবারে ব্যবহৃত রাজকীয় অলংকরণ প্রদর্শিত হয়।
ফ্রা থিনাঙ্গ আমারিন্ উইনিটচাই মাহাইসূর্য ফিমান হল এই ভবনটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইমারত। এই থাই শৈলীর সিংহাসন সভাগৃহটি বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নির্মিত হয়েছিল।
গ্র্যান্ড প্যালেস ভবনের আরোও অন্যান্য কিছু আগ্রহদীপ্ত পরিদর্শনমূলক স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে রাজ পরিবারের দপ্তর, সালা লূক খুন নাই, সালা সাহাথাই সামাখোম, সিওয়ালাই বাগিচা, হো শাস্ত্রখোম, হো সুলালাই ফিমান এবং হো ফ্রা দেট মোন্তিয়েন।
ব্যাংককের কেন্দ্রে অবস্থিত গ্র্যান্ড প্যালেস শিয়ামের রাজাদের সরকারি বাসভবন হিসেবে পরিষেবিত হত। গ্র্যান্ড প্যালেস থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিকটবর্তী বিমানবন্দরটি হল ডোন মূয়েয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। গ্র্যান্ড প্যালেস পরিভ্রমণের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপায় হল ভায়া ওয়্যাটার ট্যাক্সি।
গ্র্যান্ড প্যালেস, বছরের 365 দিনই খোলা থাকে। তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানকার আবহাওয়া মনোরম থাকায় এই সময়ই হল গ্র্যান্ড প্যালেস পরিদর্শনের সেরা সময়।
গ্র্যান্ড প্যালেস সারাবছর ধরে সকাল 8:30-টা. থেকে বিকেল 3:30-টে পর্যন্ত খোলা থাকে।
গ্র্যান্ড প্যালেসে প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য হল মাথাপিছু 400 বি.এইচ.টি (400 BHT)।
নিকটবর্তী আকর্ষণ : সিলোম, ব্যাংকক সীসেল মিউজিয়াম, স্ক্যাইবার, শ্রী মহামারিয়াম্মান মন্দির, নিলসোন হেয়স গ্রন্থাগার, ডি.জে. স্টেশন এবং মাউন্ট সাপোলা।
* সর্বশেষ সংযোজন : October 07, 2015