হাওয়া মহল, জয়পুর শহরের সবচেয়ে সম্ভ্রম উদ্রেককারী স্থান। এটি “প্যালেস অফ উইন্ডস” নামেও পরিচিত, কারণ এটিকে শীতল রাখতে জানালাগুলি হাওয়া-চলাচলর উপযুক্ত। প্রাসাদটিতে 953-টি পাথর খোদিত জানালা রয়েছে।
আগেকার দিনে, রাজপরিবারের মেয়েদের সর্বজনের সামনে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হত না। রাজ পরিবারের মেয়েরা যাতে নিকটবর্তী অঞ্চল ও সরণীগুলির দৈনন্দিন কার্যকলাপ দর্শন করতে পরে অথচ অন্যরা তাদের দেখতে না পায়, সেই উদ্দেশ্যে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রাসাদটি একটি বিশাল ভবনের সম্প্রসারিত অংশ। পাথরের উৎকীর্ণ পর্দা, ছোট কাঁচ লাগানো পাল্লা এবং খিলানাকার ছাদ হল এই জনপ্রিয় পর্যটন স্থলটির কিছু বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও স্মৃতিস্তম্ভটি অতি চমৎকারভাবে ঝুলন্ত কার্নিশের দ্বারা সজ্জিত হয়েছে। জয়পুরের অন্যান্য স্মৃতি-স্তম্ভের ন্যায়, এই রাজপ্রাসাদটিও গোলাপী ও লাল বর্ণের পাথর দ্বারা নির্মিত।
প্রাসাদটির উচ্চতা 15 মিটার। হাওয়া মহলের সম্মুখভাগ দেখে মনে হয় যেন এটি কেবল একটি ফ্রেম এবং এর পিছনে কিছুই নেই। উপরের তিনটি তলা কেবলমাত্র একটি করে কক্ষের সমন্বয়ে গঠিত। প্রাসাদটির গোড়ায় দুটি আঙ্গিনা রয়েছে। প্রাসাদের সম্মুখভাগ অর্ধ-অষ্টকোণী কুলুঙ্গি, কলস এবং গম্বুজ ও বেলেপাথরে তৈরি বিস্তারিতভাবে উৎকীর্ণ ঝাঁঝরির সঙ্গে সুশোভিত রয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এই স্মৃতিস্তম্ভটির আকৃতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুকুটের অনুরূপ। প্রাসাদটি কেবল বাইরে থেকেই আকর্ষণীয় দেখায়। অভ্যন্তরীণ বিভাগটি স্থাপত্যের অলঙ্করণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। কক্ষগুলি খুবই সাধারণ এবং স্মৃতিস্তম্ভটির উপরের অংশে পৌঁছানোর জন্য স্তম্ভ রয়েছে। আগ্রহের ব্যাপার হল, প্রাসাদটিতে পিছনের দিক দিয়ে প্রবেশ করতে হয়, সামনের দিক থেকে নয়। প্রাসাদটিতে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর আছে।
হাওয়া মহল, জয়পুর শহরের কেন্দ্রে, বড়ি চৌপদ নামে পরিচিত একটি বড় রাস্তার প্রতিচ্ছেদনের উপর অবস্থিত। আপনি যদি বিদেশ থেকে আসছেন, আপনি জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়ে আসতে পারেন। অন্যথায় আপনি নতুন দিল্লীর, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও উড়ে আসতে পারেন। এখান থেকে হয় ট্যাক্সির মাধ্যমে, বা জয়পুরের অন্তর্দেশীয় বিমানের মাধ্যমে সাঙ্গানের বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেন। আপনি যদি রেলপথ পরিবহনের মাধ্যমে জয়পুর ভ্রমণের ইচ্ছা করেন, তবে জয়পুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে, আপনি কোনও ট্যাক্সি বা বাসের মাধ্যমে স্মৃতিস্তম্ভটিতে পৌঁছাতে পারেন।
যেহেতু জয়পুরে গ্রীষ্মাকাল অত্যন্ত প্রখর হয়, সেই কারণে বসন্ত, শরৎ বা শীতের মরশুমে হাওয়া মহল সফর করাটাই বাঞ্চনীয়।
স্মৃতিস্তম্ভটি প্রতিদিন সকাল 9.00-টা. থেকে বিকেল 4.30-টা. পর্যন্ত খোলা থাকে।
হাওয়া মহলে প্রবেশের জন্য ভারতীয়দের মাথাপিছু 10/- টাকা এবং বিদেশীদের মাথাপিছু 50/- টাকা প্রবেশমূল্য লাগে।
নিকটবর্তী আকর্ষণ : ত্রিপোলিয়া বাজার, শীস্ মহল, যন্তর মন্তর, মহারাজা দ্বিতীয় সওয়াই মান সিং মিউজিয়াম, স্বর্গশূলী টাওয়্যার, মাঙ্কি মন্দির, শিশোদিয়া রাণীর প্রাসাদ ও উদ্যান, জয়পুর চিড়িয়াখানা, রাজ মন্দির সিনেমা এবং রয়্যাল গাইতোর টূম্বা।
* সর্বশেষ সংযোজন : July 13, 2015